Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

মৎস্য সম্পদের করোনা (কোভিড-১৯) পরিস্থিতিতে করণীয়

কৃষিবিদ মোঃ আলতাফ হোসেন চৌধুরী
২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে কোভিড-১৯ বা করোনা ভাইরাস রোগ প্রথম হানা দেয় চীনের উহান প্রদেশে। বর্তমানে এই রোগটি বৈশ্বিক মহামারী রোগ হিসাবে দেখা দিয়েছে। বর্তমানে বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশেই এই রোগটি হানা দিয়েছে। রোগটির প্রভাবে বিশ্ব অর্থনীতির চাকা আজ নড়বড়। এই অবস্থা চলতে থাকলে বিশ্ব অর্থনীতির চাকা বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশংকা রয়েছে। বিশ্ব তথা বাংলাদেশের প্রতিটি সেক্টরেই কোভিড-১৯ এর থাবা হানা দিয়েছে যা থেকে মৎস্য সেকটরের বাঁচার উপায় নেই।
মাছ চাষ মুলতঃ তিনটি বিষয়ের উপর ওৎপ্রোতভাবে জড়িত, বিষয়গুলো হলোঃ (১) ফিড(খাবার), (২) সিড (পোনা), (৩) ম্যানেজমেন্ট (ব্যবস্থাপনা)। উক্ত বিষয়গুলোর একটির ঘাটতি হলেও মাছচাষ ব্যাহত হয়। তাছাড়াও মাটি ও পানির ভৌত রাসায়নিক গুণাবলী মাছচাষের জন্য বড় নিয়ামক হিসাবে কাজ করে। তাপমাত্রা কম ও ভৌত রাসায়নিক গুণাবলীর সঠিক সমন্বয় মাটি ও পানিতে বিদ্যমান না থাকার কারণে মাছসহ অন্যান্য জলজ প্রাণীর সুস্থ্ভাবে বেঁচে থাকা এবং বৃদ্ধি জটিল হয়ে পড়ে। অতীতে প্রাকৃতিক জলাশয় থেকে ব্যাপক মৎস্য আহরণ সম্ভব ছিল কিন্তু বর্তমানে মনুষ্য সৃষ্টি কারণে              প্রাকৃতিক জলাশয়ে মাছের উৎপাদন ব্যাপকমাত্রায় হ্রাস পেয়েছে। প্রাকৃতিকভাবে মাছের উৎপাদন হ্রাস পাওয়ার কারণে চাষের মাছের উপর নির্ভরশীলতা বৃদ্ধি পেয়েছে অনেকগুণ। আর অধিক ঘনত্বে মাছচাষ করতে এবং অধিক উৎপাদন লাভের জন্য একদিকে যেমন অধিক পুজির প্রয়োজন তেমনি মাছের রোগ বালাইসহ বিভিন্ন সমস্যাও দেখা যায়। তাই এই মৎস্য সম্পদের ক্ষতি মোকাবেলায় করোনা (কোভিড-১৯) কালীন সময়ে  করণীয় সম্পর্কে আলোচনা করা হলো ঃ
করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নয়নে প্রাণীজ (মৎস্য) আমিষের ভুমিকা
 করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে জয়ী হতে চাইলে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নয়ন ঘটাতে হবে। দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নয়ন ঘটাতে চাইলে মাছ ও মৎস্য জাত দ্রব্য শরীরের জন্য খুবই প্রয়োজন। মৎস্য শিল্পের মাধ্যমে আমরা সহজে মৎস্য প্রোটিনের জোগান দিতে পারি। মাছ এবং মৎস্যজাত এমন একটি খাদ্যদ্রব্য যেখানে অত্যাবশ্যকীয় ্অ্যামাইনো এসিড, ভিটামিন, মিনারেল, ফ্যাট এবং অ্যান্টি অক্রিড্যান্ট বিদ্যমান। শরীরের ইমিউনিটি বাড়ানোর জন্য প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় মাছ রাখতে হবে। মাছ এমন একটি খাবার যাতে কোনো অরুচি আসে না। সামুদ্রিক মাছে আছে যথেষ্ট মিনারেল এবং খনিজ লবণ যা শরীর গঠনে অতীব জরুরি। তাছাড়াও ভিটামিন           বি-৬ রয়েছে যা আমাদের শরীরের প্রয়োজনীয়তার অর্ধেক পুরন করে এবং সরাসরি লোহিত এবং শ্বেত রক্ত কনিকা  তৈরি করে। প্রাণীজ  আমিষ না খাওয়ার ফলে শরীর জিংক, কপার ও ভিটামিন বি-৬ কম পাবে এবং শরীর কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরি করতে পারবে না। এখন পর্যন্ত কোভিড-১৯ এর কোনো টিকা বা ঔষধ আবিষ্কার হয়নি তাই ছোট, বড় বা যে কোনো বয়সের মানুষকে মাছ বা মৎস্য জাত দ্রব্য সরাসরি বা পরোক্ষভাবে ভক্ষণের মাধ্যমে কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে হবে।
কর্মসংস্থানে মৎস্য ও মৎস্যজাত শিল্পের গুরুত্ব
বাংলাদেশে মৎস্য শিল্প একটি ক্রমবিকাশমান শিল্প। মৎস্য অধিদপ্তরের পরিকল্পিত কর্মপরিকল্পনায় বিগত ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে ৭৩.১৭১ মে.টন মৎস্য ও মৎস্যজাত দ্রব্য পণ্য রপ্তানি করে ৪২৫০ কোটি টাকা আয় হয়েছে। আমাদের মোট দেশজ উৎপাদনের ৩.৭৫ শতাংশ এবং জাতীয় কৃষিজ উৎপাদনের ২৫.৩০ শতাংশ মৎস্য সেক্টরের অবদান। আমাদের দৈন্দদিন মাথাপিছু ৬০ গ্রাম চাহিদার বিপরীতে মাছ গ্রহণের পরিমাণ            বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৬২.৫৮ গ্রামে। মৎস্যখাতে প্রতিবছর গড়ে প্রায় ৬ লক্ষ লোকের নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে। সে হিসাবে এখাতে বিগত ১০ বছরে প্রায় ৬০ লক্ষাধিক লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে।
মৎস্য সম্পদে করোনার প্রভাব
করোনা ভাইরাসের কারণে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে লকডাউনের শুরুতে প্রথমেই ধাক্কা খায় মাছের রেণু উৎপাদনকারী খাত। যদিও লকডাউনের প্রভাব মুক্ত রাখা হয়েছে মৎস্য উৎপাদন ও সরবরাহকে তবুও দূরদূরান্তের মৎস্য খামারিদের মাঝে মৎস্য জাত দ্রব্য ও পোনা সরবরাহে জটিলতা দেখা যায়। উৎপাদনের চেয়ে সঠিক মূল্যে মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্য বিক্রয় জটিল হয়ে পড়ছে। ফড়িয়াদের দৌরাত্বে সঠিক মূল্য পাবে কিনা খামারিরা আতংকে আছেন। বিভিন্ন মিডিয়ায় মনোসেক্স তেলাপিয়া করোনা ছড়ানোর অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। অথচ সারা দুনিয়ায় মনোসেক্স তেলাপিয়া বা মৎস্যজাত দ্রব্য থেকে করোনা ছড়িয়েছে এমন কোনো রেকর্ড নেই। মৎস্য অধিদপ্তর  এরই মধ্যে বিশেষ উদ্যোগ নিয়ে খামারিদের পাশে দাঁড়িয়েছে। ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়কেন্দ্রের মাধ্যমে মৎস্য ও মৎস্যজাত দ্রব্য বিক্রয়ের ব্যবস্থা করে দিচ্ছে। এতে খামারিরা কিছুটা ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবে।
করোনা পরিস্থিতিতে করণীয়
* পুকুরের পাড় উঁচুকরণ, পাড়ের সকল রকম গর্ত ও অন্তরমুখী নালা বন্ধ করা যাতে বন্যাসহ অন্যান্য বাইরের পানি পুকুরে প্রবেশ করতে না পারে।
* পুকুরে নলক‚পের অথবা শোধিত পানি সরবরাহ করা, পুকুরের সাথে নদী-নালা, খাল-বিল বা অন্য কোন নর্দমা বা ড্রেন কেটে সংযোগ দেওয়া যাবে না। কারন পানি    রোগজীবাণুর একটি অন্যতম প্রধান বাহক।
*  রোগমুক্ত এলাকা থেকে সুস্থ ও সবল পোনা লবণ জলে শোধন করার পর মজুদ করা (২.৫% লবণ জলে ২/৩ মিনিট বা সহ্য ক্ষমতা অনুযায়ী ততোধিক সময়ে গোসল করানো)।
*  পুকুরে সকল প্রকার বন্য মাছ, পোকামাকড়, কাঁকড়া, সাপ ব্যাঙ ইত্যাদির প্রবেশ রোধ করতে হবে। কারণ এরা বাইরের রোগজীবাণু পুকুরের ভেতরে নিয়ে আসে।
*  প্রাকৃতিক জলাশয়, ধানক্ষেত, হাওর, বাঁওড়, বিলের পানিতে কাজ করার পর পুকুরে নেমে হাত-পা বা অন্য কোন সামগ্রী ধৌত করা যাবে না।
*  জালসহ অন্যান্য খামার সরঞ্জাম পুকুরে ব্যবহারের পূর্বে  জীবাণুমুক্ত করতে হবে( বিøচিং পাউডার, পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট ইত্যাদি ব্যবহার করে)।
* খামারে/হ্যাচারিতে প্রবেশের পূর্বে খামারকর্মী ও দর্শনার্থীদের পা, জুতা ইত্যাদি জীবাণুমুক্ত করা উচিত
* (বিøচিং পাউডার দ্রবণে)।
* রোগের যাবতীয় বাহক (ঈধৎৎরবৎ) যেমন- পানি, বন্যামাছ, মানুষ, গরু, ছাগল, পাখি, পোকা-মাকড় ইত্যাদি দ্বারা রোগ ছড়ানোর ব্যাপারে সতর্ক হতে হবে।
*  খাদ্য ও চিকিৎসা সামগ্রীর মূল্য কৃষকদের ক্রয়সীমার মধ্যে রাখার জন্য ভর্তুকি প্রদান করা যেতে পারে।
*   করোনা কালীন সময়ে মৎস্য অধিদপ্তরের যেসব কর্মকর্তা এবং কর্মচারী মাঠ পর্যায়ে সক্রিয় থেকে সরকারি দায়িত্ব পালন করছেন তাদের জন্য বিশেষ প্রণোদনার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
*  আমিষ খাওয়ার বিষয়ে স্যোসাল মিডিয়ায় প্রচারিত বিভিন্ন নেতিবাচক  প্রচারণার বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে।
*  কোভিড -১৯ এর পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষতিগ্রস্থ প্রান্তিক খামারিদের স্বল্পসুদে ব্যাংকঋণ এর ব্যবস্থা করতে হবে এবং খামারিদের প্রণোদনার টাকা ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে দিতে হবে।
বৈশ্বিক করোনা পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকার কৃষি সেক্টরের মতো মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতেও প্রণোদনার কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। আশা করা যায় খুব দ্রæত বাস্তবায়ন হবে। য়
খামার ব্যবস্থাপক, মৎস্যবীজ উৎপাদন খামার, গোবিন্দগঞ্জ, গাইবান্ধা,  Email: Chowdhari_33@yahoo.co, মোবাইল : ০১৭১২৪০৮৩৫৩


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon